সালাতুল তাসবিহ নামাজের নিয়ম ও ফজিলত

সালাতুল তাসবিহ নামাজের নিয়ম ও ফজিলত

সালাতুল তাসবিহ একটি বিশেষ নফল নামাজ, যা আল্লাহর গুণগান ও পাপমুক্তির উদ্দেশ্যে পড়া হয়। এই নামাজ চার রাকাতে আদায় করা হয়, তবে এটি একবারে বা দুই রাকাত করে ভাঙা যায়। সালাতুল তাসবিহের মূল বৈশিষ্ট্য হলো এতে নির্দিষ্ট তাসবিহ "সুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদুলিল্লাহি ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার" প্রতিটি রাকাতে ৭৫ বার পড়া হয়, ফলে সম্পূর্ণ নামাজে এটি ৩০০ বার হয়।

এই নামাজের বিশেষ ফজিলত হলো, এটি পাপমুক্তির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাসূলুল্লাহ (সা.) সালাতুল তাসবিহকে পাপ মোচনের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং একে নিয়মিতভাবে আদায় করার জন্য উম্মতকে উৎসাহিত করেছেন।
সালাতুল তাসবিহ নামাজের নিয়ম ও ফজিলত

সালাত কাকে বলে

সালাত বা নামাজ হলো ইসলাম ধর্মের অন্যতম প্রধান ইবাদত, যা মুসলমানদের জন্য ফরজ বা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এটি আল্লাহর প্রতি আনুগত্য প্রকাশের একটি বিশেষ পদ্ধতি, যেখানে নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী আল্লাহর সামনে দণ্ডায়মান হয়ে দোয়া, কুরআন তিলাওয়াত, রুকু, সিজদাহ ইত্যাদির মাধ্যমে তাঁর ইবাদত করা হয়।

আরো পড়ুন: তাহাজ্জুতের নামাজের নিয়ম

সালাত ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে অন্যতম এবং এটি দৈনিক পাঁচবার আদায় করতে হয়। এই নামাজের মাধ্যমে মুমিন আল্লাহর সঙ্গে তার সম্পর্ককে মজবুত করে, আত্মার পবিত্রতা অর্জন করে এবং জীবনকে সঠিক পথে পরিচালিত করার অনুপ্রেরণা লাভ করে।

সালাতুল হাজত নামাজের পর দোয়া

সালাতুল হাজত হলো এমন একটি নফল নামাজ যা বিশেষ কোনো প্রয়োজন বা সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে আদায় করা হয়। নামাজের পর আল্লাহর কাছে নিজের প্রয়োজন পূরণের জন্য বিশেষভাবে দোয়া করা হয়। যদিও সালাতুল হাজতের পর নির্দিষ্ট কোনো দোয়া নেই, তবে সাধারণত দোয়া করা হয় এইভাবে:

দোয়া:

উচ্চারণ:
"আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা মুজিবাতি রাহমাতিকা, ওয়া আযায়িমা মাগফিরাতিকা, ওয়াস সালামাতা মিন কুল্লি ইসমিন, ওয়াল গ্বানিমাতা মিন কুল্লি বিররিন, ওয়াল ফাওযা বিল জান্নাতি, ওয়ান নাজাতা মিনান naar. লা তাদা' লি ধাম্বান ইল্লা গফারতাহু, ওয়ালা হাম্মান ইল্লা ফাররজতাহু, ওয়ালা হাজাতান হিয়া লাকা রিদান ইল্লা ক্বাযাইতাহা ইয়া আরহামার রাহিমীন।”

অর্থ:
"হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছ থেকে প্রার্থনা করছি আপনার রহমতের মাধ্যমগুলিকে, আপনার ক্ষমার নিশ্চিতকরণকে, প্রতিটি পাপ থেকে নিরাপত্তাকে, প্রতিটি কল্যাণ থেকে অর্জনকে, জান্নাতে বিজয় লাভকে এবং দোজখ থেকে মুক্তিকে। আপনি আমার কোনো গুনাহকে ক্ষমা ছাড়া ছেড়ে দেবেন না, কোনো দুশ্চিন্তাকে মুক্তি ছাড়া রাখবেন না, এবং আমার কোনো প্রয়োজনকে পূর্ণ না করে রাখবেন না যা আপনার সন্তুষ্টির জন্য। হে দয়ালুদের মধ্যে সবচেয়ে দয়ালু!"

এই দোয়া ছাড়াও নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী নিজের ভাষায় আল্লাহর কাছে দোয়া করা যায়।

সালাতুল তাসবিহ নামাজ সুন্নত নাকি নফল

সালাতুল তাসবিহ হলো একটি বিশেষ নামাজ, যা ইসলামে আলাদা গুরুত্ব বহন করে। এটি মূলত নফল নামাজ হিসেবে পরিগণিত হলেও, এর সাথে সংযুক্ত সুন্নত বিষয়ক আলোচনা অনেক সময় বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে। তাই এখানে এ বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া হলো।

১. সালাতুল তাসবিহ: নফল নাকি সুন্নত?
  • নফল নামাজ: সালাতুল তাসবিহ মূলত নফল ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত। নফল নামাজ সেই ইবাদত, যা বাধ্যতামূলক নয়, তবে আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে স্বেচ্ছায় আদায় করা হয়। সালাতুল তাসবিহ বাধ্যতামূলক নয়, এটি অতিরিক্ত ইবাদত হিসেবে পরিগণিত হয়।
  • সুন্নত নামাজ: সুন্নত নামাজকে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর নিয়মিত আমল হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যদিও কিছু বিদ্বান সালাতুল তাসবিহকে সুন্নতে মুস্তাহাব হিসেবে দেখেছেন, তবে এটি ফরজ বা ওয়াজিব নয়। তাই এটি সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ (যে সুন্নত পালনের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে) হিসেবে গণ্য হয় না।
২. হাদিস থেকে প্রমাণ:সালাতুল তাসবিহের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে হাদিস পাওয়া যায়। রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁর চাচা হজরত আব্বাস (রা.)-কে এই নামাজ আদায় করার পরামর্শ দেন এবং বলেন, এটি পাপমুক্তির জন্য খুবই কার্যকর। বিভিন্ন হাদিসে এই নামাজের ফজিলত ও প্রক্রিয়া বর্ণিত হয়েছে।

তবে এই হাদিসগুলির সনদের মান নিয়ে আলেমদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। অনেক আলেম এই নামাজকে যথেষ্ট ফজিলতপূর্ণ মনে করেন, আবার কিছু আলেম হাদিসের সনদের দুর্বলতা উল্লেখ করে এ বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করেছেন।

৩. আলেমদের মতামত:

  • হানাফি মাজহাব: সালাতুল তাসবিহকে একটি নফল ইবাদত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ইমাম আবু হানিফার মতে, এটি আদায় করলে অনেক পাপ ক্ষমা হয়, তবে এটি বাধ্যতামূলক নয়।
  • শাফেয়ি মাজহাব: ইমাম শাফেয়ি সালাতুল তাসবিহকে বিশেষভাবে উৎসাহিত করেছেন। তিনি এটিকে ফজিলতপূর্ণ নফল নামাজ হিসেবে দেখেছেন এবং এটি নিয়মিত আদায়ের পরামর্শ দিয়েছেন।
  • হাম্বলি ও মালিকি মাজহাব: এই মাজহাবগুলিতে কিছু আলেম সালাতুল তাসবিহকে উৎসাহিত করেছেন, আবার কিছু আলেম এই নামাজের সনদের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

সালাতুল হাজত নামাজের নিয়ম

সালাতুল হাজত হলো এমন একটি নফল নামাজ, যা কোনো প্রয়োজন, সমস্যা বা দুঃখ থেকে মুক্তি পেতে বা বিশেষ কোনো حاجت (প্রয়োজন) পূরণের জন্য আল্লাহর সাহায্য চেয়ে আদায় করা হয়। এই নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর দরবারে নিজের সমস্যার সমাধান কামনা করা হয়। সালাতুল হাজতের নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই; এটি যখনই প্রয়োজন বোধ হয় তখনই আদায় করা যায়।
সালাতুল হাজত নামাজের নিয়ম:

নিয়ত করুন: প্রথমে মনে মনে সালাতুল হাজতের নিয়ত করুন। উদাহরণস্বরূপ, আপনি মনে মনে বলতে পারেন, "আমি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে এবং আমার প্রয়োজন পূরণের জন্য সালাতুল হাজতের নামাজ আদায় করছি।"

দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করুন: সালাতুল হাজত সাধারণত দুই রাকাত নফল নামাজ হিসেবে আদায় করা হয়। তবে কেউ চাইলে চার রাকাতও আদায় করতে পারেন। দুই রাকাত নামাজের নিয়ম সাধারণ নফল নামাজের মতোই।
  • প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহা পড়ার পর কোনো সুরা পড়ুন।
  • দ্বিতীয় রাকাতে সুরা ফাতিহা পড়ার পর আবার কোনো সুরা পড়ুন।
  • নিয়মিত নামাজের মতো রুকু, সিজদা, এবং তাশাহহুদ পড়ে নামাজ শেষ করুন।
নামাজ শেষে দোয়া করুন: সালাতুল হাজতের নামাজ শেষ করার পর আল্লাহর কাছে আপনার حاجت বা প্রয়োজন পূরণের জন্য দোয়া করুন। সালাতুল হাজতের জন্য নির্দিষ্ট কোনো দোয়া নেই। আপনি চাইলে আরবি ভাষায় কোনো দোয়া করতে পারেন, কিংবা নিজের ভাষায় আল্লাহর কাছে যা চাচ্ছেন তা ব্যক্ত করতে পারেন। এই সময় আপনি ইস্তেগফার (ক্ষমা প্রার্থনা) ও দরুদ শরীফও পড়তে পারেন।
উদাহরণস্বরূপ, আপনি এই দোয়াটি করতে পারেন (যা পূর্বের উত্তরে উল্লেখ করেছি):
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ مُوجِبَاتِ رَحْمَتِكَ... (উল্লেখিত দোয়া)

আল্লাহর উপর পূর্ণ বিশ্বাস রাখুন: দোয়া করার সময় এবং নামাজ আদায়ের পর আল্লাহর উপর পূর্ণ বিশ্বাস রাখুন যে, তিনি আপনার দোয়া কবুল করবেন এবং আপনার সমস্যার সমাধান করবেন। ধৈর্য ধরে আল্লাহর সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করুন।

সালাতুল হাজত এমন একটি ইবাদত, যা মানুষকে আল্লাহর সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন করতে সহায়ক।

সালাতুল তাসবিহ নামাজের ফজিলত

সালাতুল তাসবিহ নামাজের ফজিলত নিয়ে ইসলামে বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এটি একটি বিশেষ নফল নামাজ, যা মূলত পাপ মোচন এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য আদায় করা হয়। রাসূলুল্লাহ (সা.) সালাতুল তাসবিহের ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে উল্লেখ করেছেন, যা মুসলিমদের কাছে এই নামাজের গুরুত্বকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
সালাতুল তাসবিহ নামাজের ফজিলত:

পাপ মোচন: হাদিসে উল্লেখ আছে যে, সালাতুল তাসবিহ নামাজ আদায় করলে অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যতের পাপসমূহ ক্ষমা করা হয়। এটি এমন এক ইবাদত, যা আল্লাহর পক্ষ থেকে পাপমুক্তির জন্য বিশেষভাবে প্রদত্ত হয়েছে। হজরত আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁকে এই নামাজ আদায় করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছিলেন এবং বলেন, এটি তোমার সব গুনাহ মুছে দেবে, চাহে তা পুরানো হোক বা নতুন, ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত, ছোট বা বড়, গোপন বা প্রকাশ্য।

আল্লাহর নৈকট্য লাভ: সালাতুল তাসবিহ আল্লাহর গুণগান এবং তাঁর মহিমা বর্ণনার একটি বিশেষ পদ্ধতি। এতে নির্দিষ্ট তাসবিহ ৩০০ বার পড়ার মাধ্যমে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা, তাঁর মহিমা এবং শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এটি মুসলিমদেরকে আল্লাহর নৈকট্য লাভে সহায়ক এবং তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।

জান্নাতের সুসংবাদ: সালাতুল তাসবিহ নিয়মিত আদায়কারীদের জন্য জান্নাতের সুসংবাদও দেওয়া হয়েছে। এটি জান্নাত লাভের জন্য এক বিশেষ ইবাদত হিসেবে গণ্য হয়, যা মুমিনদের আখিরাতের মুক্তি ও জান্নাতের পথে প্রেরণা জোগায়।

মন ও আত্মার প্রশান্তি: এই নামাজ আত্মার প্রশান্তি এবং পাপের বোঝা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য একটি মাধ্যম। সালাতুল তাসবিহ নামাজের মাধ্যমে একজন মুমিন নিজের পাপের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং পাপমুক্তির আশা রাখেন। এই ইবাদত আত্মাকে শান্তি দেয় এবং দুনিয়ার দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দেয়।

সালাতুত তাসবিহ নামাজের সময়

সালাতুল তাসবিহ নামাজের নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই; এটি একটি নফল ইবাদত হওয়ায় দিনের বা রাতের যেকোনো সময়ে আদায় করা যেতে পারে। তবে কয়েকটি সময় আছে, যখন নামাজ আদায় করা মাকরূহ (অপছন্দনীয়)। সেই সময়গুলো বাদ দিয়ে সালাতুল তাসবিহ যেকোনো সময় পড়া যেতে পারে।
সালাতুল তাসবিহ আদায়ের উপযুক্ত সময়:

রাতের শেষাংশ (তাহাজ্জুদের সময়): রাতের শেষাংশ, বিশেষত তাহাজ্জুদের সময় সালাতুল তাসবিহ আদায় করা খুবই ফজিলতপূর্ণ বলে বিবেচিত। এই সময়ে আল্লাহর কাছ থেকে দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। যারা সালাতুল তাসবিহের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য পেতে চান, তারা এই সময়টি বেছে নিতে পারেন।

দিনের বেলা: দিনের বেলায় ফরজ নামাজের বাইরে যেকোনো সময়ে সালাতুল তাসবিহ আদায় করা যেতে পারে। বিশেষত দোহার পর এবং আছরের নামাজের আগে পর্যন্ত এই সময়গুলোতেও নামাজ আদায় করা ভালো।
মাকরূহ সময়সমূহ (যখন সালাতুল তাসবিহ পড়া নিষিদ্ধ):

সূর্যোদয়ের সময়: সূর্য ওঠার সময় (প্রায় ১২-১৫ মিনিটের মধ্যে) কোনো নামাজ আদায় করা মাকরূহ।

জোহরের আগে সূর্য মধ্যাকাশে থাকা অবস্থায়: ঠিক জোহরের সময় শুরু হওয়ার আগে সূর্য যখন ঠিক মাথার ওপরে থাকে, তখন কিছু সময়ের জন্য নামাজ আদায় নিষিদ্ধ।

সূর্যাস্তের সময়: মাগরিবের নামাজের ঠিক আগে সূর্য যখন অস্ত যাচ্ছে, তখনও নামাজ আদায় করা মাকরূহ।

উপসংহার:সালাতুল তাসবিহ হলো এমন একটি নামাজ, যা মুসলমানদের জন্য আল্লাহর নৈকট্য লাভের এবং পাপমুক্তির এক মহৎ সুযোগ। যদিও এটি ফরজ বা ওয়াজিব নয়, তবে এর ফজিলত অসীম। এটি আদায় করার মাধ্যমে একজন মুমিন তার জীবনের পাপ থেকে মুক্তি পেতে পারেন এবং আখিরাতে মুক্তির আশা করতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আলজেবা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url